পাকিস্তানের পরমাণু বোমা এখন থেকে সৌদির


 সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ-কে বুকে টেনে নিচ্ছেন—একটি শক্তিশালী প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষরের পর দুই মুসলিম নেতার এই ঘনিষ্ঠতা। দৃশ্যত এটি একটি কূটনৈতিক আচার মনে হলেও মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে পরমাণু শক্তিধর পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ হয়েছে ধনী সৌদি আরব। বলা হচ্ছে, এই ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে সৌদি আরব পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রের সুরক্ষা বলয়ের নিচে চলে এসেছে।

গত কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি টালমাটাল। দখলদার ইসরায়েল ক্রমেই মুসলিম দেশগুলোর জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠছিল। সম্প্রতি কাতারে হামলা করে তারা উপসাগরীয় দেশগুলোকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এখন ইসরায়েলের হাত থেকে বাঁচতে ধনী দেশগুলো ছোটাছুটি শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে সৌদি আরব তার পুরনো বন্ধু পাকিস্তানের কাছে এসেছে, কারণ পাকিস্তানই একমাত্র মুসলিম দেশ যার হাতে রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র। বিপরীতে, দারিদ্র্যপীড়িত পাকিস্তানেরও দরকার আর্থিক সহায়তা। একে অপরের প্রয়োজনের তাগিদেই এই প্রতিরক্ষা চুক্তি হয়েছে।

চুক্তির বিস্তারিত ও সম্ভাব্য প্রভাব
চুক্তির বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কোনো কিছু প্রকাশ করা হয়নি। পাকিস্তান বরাবরই বলে এসেছে যে, তাদের পারমাণবিক অস্ত্র শুধু দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের জন্য তৈরি করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তির মধ্য দিয়ে রিয়াদের আর্থিক শক্তি ও ইসলামাবাদের বিশাল পারমাণবিক ক্ষমতার মধ্যে একটি সেতুবন্ধন হয়েছে। অর্থাৎ, ইসলামাবাদকে বিভিন্নভাবে আর্থিক সহায়তা দেবে রিয়াদ, বিনিময়ে প্রয়োজনীয় পারমাণবিক সহযোগিতা নিয়ে রিয়াদের পাশে দাঁড়াবে ইসলামাবাদ।


এই চুক্তির ওপর কড়া নজর রাখছে মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র ইসরায়েল। বলা হচ্ছে, এই চুক্তি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার হিসাব-নিকাশ বদলে দেবে। যদি কখনো ইসরায়েল সৌদি আরবে হামলা চালায়, তাহলে পাকিস্তানের সঙ্গে চুক্তির সুবাদে পাল্টা জবাব হিসেবে ইসরায়েলে পারমাণবিক হামলা চালানোর সুযোগ থাকবে সৌদির হাতে। একজন সৌদি কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন যে, পাকিস্তানের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সামরিক সংক্রান্ত সবকিছুই অন্তর্ভুক্ত। পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও পরমাণু অস্ত্রের বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

মুসলিম বিশ্বে একমাত্র পাকিস্তানই পরমাণু অস্ত্র সমৃদ্ধ দেশ। যদিও এটি এশিয়ার সবচেয়ে দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে একটি, তারপরও দেশটির রয়েছে ৬ লক্ষ সেনাসমৃদ্ধ সামরিক বাহিনী, যা বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী হিসেবে বিবেচিত। সৌদি আরবে দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানের অল্পসংখ্যক সেনা অবস্থান করছেন। নতুন এই চুক্তি আরও বড় ধরনের সামরিক সম্পৃক্ততার আভাস দিচ্ছে।


Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post