বিশ্ববাজারে লাফিয়ে কমছে স্বর্ণের দাম, জানা গেল কারণ
অক্টোবরের শুরুতে স্বর্ণের দাম লাফিয়ে বেড়ে রেকর্ড উচ্চতায় উঠলেও এখন উল্টো কমছে দাম। মূল্যবান এই ধাতুর দাম ২ শতাংশেরও বেশি কমে তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমে আসার আশায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়ায় দাম কমার এ প্রভাব শুরু হয়েছে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিশ্ববাজারে স্পট গোল্ডের দাম ২ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৮৯৯ দশমিক ৯৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত ৬ অক্টোবরের পর সর্বনিম্ন। আর ডিসেম্বরে ডেলিভারির জন্য যুক্তরাষ্ট্রে স্বর্ণের ফিউচারের দাম ২ দশমিক ৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৯১৫ দশমিক ৩০ ডলারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমে আসার আশায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেড়েছে। ফলে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা কমেছে। অন্যদিকে এখন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের আসন্ন নীতিনির্ধারণী বৈঠকের দিকেই নজর রাখছেন বিনিয়োগকারীরা।
অ্যাক্টিভট্রেডসের বিশ্লেষক রিকার্ডো ইভাঞ্জেলিস্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বাণিজ্যযুদ্ধ এড়ানোর আশায় শেয়ারবাজারসহ ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের দাম বেড়েছে। কিন্তু এর বিপরীতে, স্বর্ণের মতো নিরাপদ আশ্রয়ের সম্পদের চাহিদা কমেছে।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, চীনের সঙ্গে একটি বাণিজ্যচুক্তি সম্ভব হবে। পাশাপাশি মালয়েশিয়ায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার চারটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ও খনিজ সম্পদ নিয়ে একগুচ্ছ চুক্তি স্বাক্ষরের ঘোষণাও দেন তিনি।
গত ২৬ অক্টোবর চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ অর্থনৈতিক কর্মকর্তারা একটি সম্ভাব্য বাণিজ্যচুক্তির কাঠামো নিয়ে আলোচনা করেন এবং আগামী বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের সময় নির্ধারণের কাজ করেন।
এসব খবরে মঙ্গলবার এশিয়ার শেয়ারবাজারে বড় উত্থান দেখা যায়, কারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা কমার আশায় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগে আগ্রহ বেড়েছে।
এদিকে বুধবারের ফেড বৈঠকে সুদের হার কমানো হতে পারে, এমন প্রত্যাশা রয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তারা ফেড চেয়ারম্যান জেরোম পাওয়েলের বক্তব্যের দিকেও নজর রাখছেন।
স্বর্ণ সাধারণত কম সুদের পরিবেশে বেশি লাভজনক হয়ে ওঠে, কারণ এটি থেকে সুদ পাওয়া যায় না, ফলে অন্য বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বেড়ে যায়। চলতি বছরেই স্বর্ণের স্পট দামে প্রায় ৫৩ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছিল। গত ২০ অক্টোবর স্বর্ণের দাম সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে উঠেছিল, তবে পরে তা ৩ দশমিক ২ শতাংশ কমে গেছে।
বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সিটি সম্প্রতি তাদের তিন মাসের স্বর্ণমূল্যের পূর্বাভাস কমিয়ে ৪ হাজার ডলার থেকে ৩ হাজার ৮০০ ডলার প্রতি আউন্সে এনেছে। অন্যদিকে ক্যাপিটাল ইকোনমিক্স জানিয়েছে, ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ স্বর্ণের দাম দাঁড়াতে পারে প্রতি আউন্স ৩ হাজার ৫০০ ডলারে।
অন্য ধাতুর দামের ক্ষেত্রেও পতন দেখা গেছে। স্পট সিলভার কমে প্রতি আউন্স ৪৫ দশমিক ৭১ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। প্লাটিনামের দাম কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ, দাঁড়িয়েছে প্রতি আউন্স ১ হাজার ৫৩৮ দশমিক ৫০ ডলারে। আর প্যালাডিয়ামের দামও ৩ দশমিক ৩ শতাংশ কমে ১ হাজার ৩৫৬ ডলারে নেমেছে, যা তিন সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন।
🎁 Your Special Offer is Loading...
Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.
⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment