ঘুমের সময় কেন অজু ভঙ্গ হয়?

 Home

ঘুমের সময় কেন অজু ভঙ্গ হয়?

 


ইসলামে অজু নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত এবং অন্যান্য ইবাদতের পূর্বে অপরিহার্য শর্ত। অজু নষ্ট হওয়ার এক গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো ঘুম।চিৎ, কাত বা হেলান দিয়ে ঘুমালে অজু ভঙ্গ হয়ে যায়। তাই নামাজ বা অন্যান্য ইবাদতের আগে আবার অজু করতে হয়। প্রশ্ন হলো, কেন ঘুম অজুকে ভঙ্গ করে?


অজুর অর্থ ও তাৎপর্য

“অজু” শব্দের অর্থ হলো পরিষ্কার হওয়া, আলোকিত হওয়া। রাসুল (সা.) বলেছেন, “যে ব্যক্তি অজু করে ভালোভাবে অজু সম্পন্ন করে, তার গুনাহগুলো শরীর থেকে ঝরে যায়।”

(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৪৪)


অর্থাৎ অজু শুধু দেহের পরিচ্ছন্নতা নয়, আত্মিক পবিত্রতার প্রতীকঘুমের কারণে অজু ভঙ্গের কারণ

ঘুম অবস্থায় মানুষের চেতনা ও নিয়ন্ত্রণ শক্তি দুর্বল হয়ে যায়। শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ শিথিল হওয়ায় অজান্তেই বায়ু নির্গমনের সম্ভাবনা থাকে। ইসলামি শরিয়ত অজু ভঙ্গের অন্যতম কারণ হিসেবে বায়ু নির্গমনকে চিহ্নিত করেছে।


রাসুল (সা.) বলেছেন, “অজু ভঙ্গ হয় তখনই, যখন কেউ বায়ু নির্গমন শোনে বা অনুভব করে।”

(সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩৬২)


অতএব ঘুম এমন একটি অবস্থা যা নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে অজু ভঙ্গের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।


ফলে আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, “যে ব্যক্তি ঘুমায়, সে যেন অজু করে নেয়।”

(সুনান আবু দাউদ, হাদিস: ২০৩; সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ৭৬)


অন্য একটি হাদিসে আনাস (রা.) বলেন, “রাসুল (সা.) সাহাবিদের সঙ্গে বসতেন, তারা নামাজের অপেক্ষায় ঘুমিয়ে পড়তেন, পরে অজু না করে নামাজ আদায় করতেন।”

(সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৩৭৬)


অর্থাৎ গভীর ঘুমে অজু ভেঙে যায়, কিন্তু সামান্য তন্দ্রায় বা বসা অবস্থায় ঘুমে ভাঙে না।


আলেমদের ব্যাখ্যা

ইমাম নববী (রহ.): “যে ঘুমে চেতনা হারায়, তার অজু ভেঙে যায়। বসা অবস্থায় অল্প ঘুমে ভাঙে না।”


ইমাম আবু হানিফা (রহ.): “শরীর শিথিল হলে অজু ভেঙে যায়; বসা বা দাঁড়ানো অবস্থায় তন্দ্রায় ভাঙে না।”


ইমাম মালেক (রহ.): “শুয়ে বা হেলান দিয়ে ঘুমালে অজু ভেঙে যায়; নামাজের অপেক্ষায় বসা অবস্থাঅর্থাৎ আলেমরা একমত, গভীর ঘুমে যেখানে নিয়ন্ত্রণ হারানো যায়, সেখানে অজু ভঙ্গ হয়; হালকা তন্দ্রায় নয়।


ঘুম হলো মানুষের প্রাকৃতিক অবস্থা, যা হাদিসে “মৃত্যুর ভাই” হিসেবে বর্ণিত। আল্লাহ বলেন, “আল্লাহই তোমাদের প্রাণগুলো গ্রহণ করেন যখন তোমরা ঘুমাও।”

(সুরা যুমার, আয়াত: ৪২)


শরিয়তের দৃষ্টিতে ঘুমের সময় দেহ ও চেতনাবোধের নিয়ন্ত্রণ হারালে অজুর পবিত্রতা রক্ষা করা সম্ভব হয় না।


ঘুমেও ইবাদতের নিয়ম

শোয়ার আগে অজু করা, নির্দিষ্ট দোয়া পাঠ করা এবং ডান কাতে শোয়া এগুলো রাসুল (সা.)-এর শিক্ষা। তিনি বলেছেন, “যে ব্যক্তি রাতে অজু করে ঘুমায়, সে ঘুমের মাঝে আল্লাহকে স্মরণ করলে তার দোয়া কবুল হয়।”

(সহিহ ইবন মাজাহ, হাদিস: ৩৮৬২)


</

🎁 Your Special Offer is Loading...

Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.

10s

⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment

Previous Post Next Post