চোখের ৫ লক্ষণই বলে দেবে আপনার কিডনি কোন অবস্থায় আছে
আমাদের শরীরে কিছু অঙ্গ আছে যেগুলো ছাড়া বেঁচে থাকা একেবারেই অসম্ভব। তার মধ্যে কিডনি অন্যতম। দুই পাশে থাকা এই ছোট্ট অঙ্গ জলের মতো চুপচাপ থেকে প্রতিদিন শরীরের ভেতরে চালায় হাজারো কাজ। মূত্র তৈরি করা থেকে শুরু করে শরীরের ক্ষতিকর বর্জ্য বের করে দেওয়া, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, এমনকি হরমোনের ভারসাম্য রক্ষা; সবকিছুই নির্ভর করে কিডনির ওপর।
অথচ আমরা সচেতন না থেকেও প্রতিদিনের কিছু সাধারণ অভ্যাস দিয়ে কিডনির ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করি। যার ফলে ধীরে ধীরে কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে অনেক সময় কোনো উপসর্গ ধরা পড়ে না। ফলে যখন ধরা পড়ে, তখন অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আপনার কিডনি কোন অবস্থায় আছে সেটা চোখের ৫ লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন। যদি অবস্থা খারাপ হয়, তবে দ্রুত চিকিৎসকের দ্বারস্থ হওয়ার কথা বলছেন তারা।
চলুন জেনে নিই সেই পাঁচটি লক্ষণ—
১. সারা দিন চোখ ফোলা
ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেরই চোখ ফোলা থাকে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। তবে সেই ফোলাভাব যদি সারাদিন থাকে, তাহলে চিন্তার বিষয়। বিশেষ করে চোখের পাতার চারপাশে ফোলাভাব থাকলে সতর্ক হোন। এটি প্রোটিনুরিয়া হতে পারে, যেখানে প্রস্রাবের মাধ্যমে প্রোটিন বের হয়ে যায়। এতে শরীরের নরম টিস্যুতে তরল জমে যায়। যেমন জমে চোখের চারপাশে। কিডনির ক্ষতির অন্যতম প্রাথমিক লক্ষণ এটি।
২. চোখ শুষ্ক, চুলকানো বা জ্বালা
চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া, শুষ্ক বোধ হওয়া বা চুলকানি অনেক কারণেই হতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ীভাবে শুষ্ক চোখ উচ্চ পর্যায়ের কিডনি রোগ বা ডায়ালাইসিস নেওয়া রোগীদের মধ্যে সাধারণত হতে দেখা যায়। এর কারণ হতে পারে ক্যালসিয়াম ও ফসফেটের ভারসাম্যহীনতা বা শরীরে বর্জ্য পদার্থ জমে গিয়ে অশ্রু উৎপাদন ও চোখের লুব্রিকেশন কমে যাওয়া। যদি পরিবেশগত কারণ ছাড়াই চোখ বারবার শুষ্ক হয়ে যায়, লাল হয়ে যায়, খচ খচ করে, তাহলে কিডনি পরীক্ষা করে ফেলুন। কৃত্রিম অশ্রু বা চোখ আর্দ্র রাখার উপায় সাময়িকভাবে স্বস্তি দিলেও আসল কারণ খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
৩. ঝাপসা দেখা
হঠাৎ দৃষ্টি ঝাপসা হওয়া, ফোকাস করতে কষ্ট হওয়া বা দ্বিগুণ দেখা—এসব হতে পারে চোখের সূক্ষ্ম রক্তনালির ক্ষতির ফলাফল হিসেবে, যা হাইপারটেনসিভ রেটিনোপ্যাথি এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি নামে পরিচিত। উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিডনি রোগের প্রধান কারণ এবং এসব রেটিনার রক্তনালিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। ফলে রেটিনায় তরল জমা, ফোলা ভাব, এমনকি গুরুতর ক্ষেত্রে দৃষ্টি হারানোর ঝুঁকি থাকে। যদি আপনার উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস থাকে এবং হঠাৎ দৃষ্টি পরিবর্তন হওয়ার মতো ঘটনাগুলো ঘটে, চোখের পরীক্ষা সঙ্গে কিডনি পরীক্ষা করানোও জরুরি।
৪. লাল বা রক্তাভ চোখ
চোখ লাল হওয়ার পেছনে অ্যালার্জি, ক্লান্তি বা সংক্রমণ— এসব সাধারণ কারণ থাকতে পারে। তবে কিডনি রোগের ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসের কারণও থাকতে পারে। রক্তচাপ বেড়ে গেলে চোখের ক্ষুদ্র রক্তনালি ফেটে গিয়ে চোখ রক্তাভ দেখাতে পারে। বিরল ক্ষেত্রে লুপাস নেফ্রাইটিসের মতো অটো ইমিউন রোগ কিডনি ও চোখ উভয়কেই প্রদাহগ্রস্ত করে তোলে। চোখ লালের সঙ্গে যদি জয়েন্টে ব্যথা, ফোলা বা ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়, তবে অবশ্যই পরীক্ষা ও চিকিৎসা করান।
৫. রং বুঝতে ঝামেলা
কিডনিতে কোনো সমস্যা তৈরি হলে এর প্রভাব পড়ে রং বোঝার ক্ষেত্রে। বিশেষ করে নীল ও হলুদ রং। এর কারণ হতে পারে অপটিক নার্ভ বা রেটিনার ক্ষতি, যা দীর্ঘমেয়াদি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা ইউরেমিক টক্সিন জমে যাওয়ার কারণে হয়। এই পরিবর্তন ধীরে ধীরে শুরু হয়। প্রথমে চোখ এড়িয়ে যেতে পারে, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা স্পষ্ট হতে থাকে। সঠিকভাবে রং ধরতে না পারলে অথবা দৃষ্টি নিস্তেজ হলে, বয়স হয়েছে ভেবে বসে থাকবেন না। চিকিৎসকের কাছে যান। পরীক্ষা করান।
🎁 Your Special Offer is Loading...
Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.
⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment