বারবার ছোট ছোট ভূমিকম্প কিসের ইঙ্গিত?
রাজধানী ঢাকা ও এর আশেপাশের এলাকায় শনিবার (২২ নভেম্বর) বিকেল ৬টা ৪ মিনিটে আবারও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। জানা গেছে, ভূমিকম্পটির মাত্রা ৩.৭। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূপৃষ্ঠ হতে ১০ কিলোমিটার গভীরে। এর আগে আজ সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটেও একবার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩.৩। উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদীর পলাশ উপজেলা।
এর আগের দিন শুক্রবার দেশব্যাপী আরও একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়, যার মাত্রা ছিল ৫.৭। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার পূর্বে নরসিংদীর মাধবদী উপজেলা। এতে দুই শিশুসহ ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
টানা তিন দফা ভূমিকম্পে দেশ ব্যাপী আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের অন্য বড় শহরগুলো নিয়ে কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞদের। কারণ, বেশির ভাগ বিশেষজ্ঞ মনে করেন, টানা এই ভূকম্পন বড় ভূমিকম্পের আভাস।
২০১৬ সালে বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচার জিওসায়েন্স–এ এ বিষয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ গবেষণা প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে বলা হয়, ভূগর্ভে যে পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে, তাতে সিলেট অঞ্চলে ৭ থেকে ৮ মাত্রার এবং চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ৮ থেকে ৯ মাত্রার ভূমিকম্প যেকোনো সময় হতে পারে। ওই গবেষণা প্রতিবেদন প্রস্তুতের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক হুমায়ুন আখতারের নেতৃত্বে একটি দল ও যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক যুক্ত ছিলেন।
ওই গবেষণা প্রকাশের পর দেশের ভূতত্ত্ববিদ ও পুরকৌশল বিশেষজ্ঞরা নড়েচড়ে বসেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে এরপর বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় মোট ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছয়তলা বা তার চেয়ে বেশি। ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলে এই ভবনগুলো ও এর বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এ ব্যাপারে অধ্যাপক হুমায়ুন আখতার সংবাদ মাধ্যমকে জানান, মেঘালয়ের শিলং থেকে সিলেট হয়ে ভুটান পর্যন্ত ভূগর্ভে যে চ্যুতি আছে, তাতে বিপুল পরিমাণে শক্তি জমা হয়েছে। সেটি মৃদু ভূমিকম্পের মাধ্যমে বেরিয়ে এসে বড় ভূমিকম্পের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এভাবে টানা অনেকগুলো ভূমিকম্প হওয়া একটি বড় ভূমিকম্প সৃষ্টির লক্ষণ। তিনি আরও বলেন, ‘তাই আমাদের আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট না করে জরুরি ভিত্তিতে দেশের প্রধান শহরগুলোতে ভূমিকম্পের সময় কী করতে হবে, তার মহড়া দেওয়া শুরু করতে হবে। করোনাকালে আমরা যেমন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছি, তেমনি ভূমিকম্প মোকাবিলার প্রস্তুতি ও মহড়াকে নিয়মিত চর্চায় নিয়ে আসতে হবে।’
🎁 Your Special Offer is Loading...
Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.
⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.
Post a Comment