সারা দেশে মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান বন্ধ ঘোষণা
সারা দেশে ছোট ও মাঝারি মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) সংগঠনটির সভাপতি মোহাম্মদ আসলাম সময় সংবাদকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সুমাশটেকের প্রধান নির্বাহী আবু সাঈদ পিয়াসকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নেয়ার প্রতিবাদে সারা দেশের ছোট ও মাঝারি মোবাইল ফোন বিক্রির দোকান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
এর আগে বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির এই নেতা বলেন, অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি পিয়াসকে আজকের (বুধবার) মধ্যে মুক্তি না দিলে সারা দেশে কঠোর আন্দোলনে নামা হবে। এসময় তারা দেশ অচল করে দেয়ার হুমকিও দেন। সুমাশটেকের প্রধান নির্বাহী আবু সাঈদ পিয়াসকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নেয়ার প্রতিবাদে দেশজুড়ে সব মোবাইল ফোন দোকান বন্ধ থাকবে।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাতে সুমাশটেকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্মার্টফোন ও গ্যাজেট ব্যবসায়ী আবু সাঈদ পিয়াসকে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) নিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এদিকে, অনিবন্ধিত স্মার্টফোনের ব্যবহার রোধ ও টেলিযোগাযোগ খাতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) ব্যবস্থা চালু করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে সরকার। এনইআইআর এমন একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা, যা প্রতিটি হ্যান্ডসেটের আন্তর্জাতিকভাবে অনুমোদিত আইএমইআই নম্বরকে ব্যবহারকারীর জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও ব্যবহৃত সিমের সঙ্গে যুক্ত করে নিবন্ধিত করবে।
এটি চালু হলে দেশের মোবাইল নেটওয়ার্কে নিবন্ধনবিহীন, চুরি হওয়া বা আমদানি অননুমোদিত ফোনের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ হবে বলে আশা করছে সরকার।
তবে বিটিআরসি ঘোষিত ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট আইডেন্টিফিকেশন রেজিস্টার (এনইআইআর) আগামী ১৬ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হওয়ার প্রেক্ষাপটে ক্ষুদ্র ও মাঝারি মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসায়ীদের জীবন-জীবিকা, বাজার স্থিতিশীলতা ও প্রযুক্তিগত অগ্রযাত্রা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশ (এমবিসিবি)। ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি বর্তমান পরিস্থিতি, সম্ভাব্য সংকট এবং প্রয়োজনীয় করণীয় বিষয়ে বিস্তারিত মতামত তুলে ধরে।
সংগঠনের সভাপতি মো. আসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো পূর্ব-পরামর্শ ছাড়াই এনইআইআর হঠাৎ বাস্তবায়নের ঘোষণা বাজারে ব্যাপক অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, যা দেশের প্রায় ২৫ হাজার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং ২০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবিকাকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে। ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে অবিক্রিত হ্যান্ডসেট বিক্রি করা অসম্ভব হওয়ায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বিপুল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বে। আমদানির ক্ষেত্রে নতুন শর্তাবলি, বিশেষ করে প্রস্তুতকারকের সঙ্গে বাধ্যতামূলক চুক্তিপত্রের নিয়ম উদ্যোক্তাদের ব্যবসা পরিচালনাকে জটিল ও ব্যয়সাপেক্ষ করে তুলবে।
তিনি আরও বলেন, মোবাইল খাতে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের দীর্ঘদিনের অবদান দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটালাইজেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। গত ২৫ বছরে এই খাতে ১০ লাখেরও বেশি দক্ষ কর্মী তৈরি হয়েছে। বিদেশফেরত প্রবাসীদের আনা ফোন বৈধভাবে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে সরবরাহের মাধ্যমে প্রত্যক্ষভাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে প্রতি বছর এক হাজার কোটি টাকারও বেশি রাজস্ব যোগ হচ্ছে। ২০১৭ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত কিছু নির্দিষ্ট প্রস্তুতকারক গোষ্ঠী প্রায় ৮৮ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-সুবিধা পেয়েছে, তবুও তারা প্রতিবেশী দেশের তুলনায় ২০-৩০ শতাংশ বেশি দামে স্মার্টফোন বিক্রি করছে, যা বাজারে অস্বাভাবিক বৈষম্য তৈরি করছে। বিটিআরসির একতরফা ইমপোর্ট নীতিমালার কারণে অনিশ্চয়তায় পড়েছে মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবসা।
সংবাদ সম্মেলনে এনইআইআর সিস্টেমের সম্ভাব্য ঝুঁকি তুলে ধরে বক্তারা বলেন, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের সকল স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর উপর রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ জোরদার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, যা ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ও মৌলিক অধিকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে। জটিল রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ার কারণে সাধারণ গ্রাহক, বিশেষ করে গ্রামীণ ব্যবহারকারী ও প্রবাসীরা ব্যাপক হয়রানির শিকার হতে পারেন। বিদেশ থেকে ২টির বেশি ফোন আনা হলে নথিপত্র যাচাই, রেজিস্ট্রেশন ও ডি-রেজিস্ট্রেশনে অতিরিক্ত জটিলতা তৈরি হবে।
মোবাইল বিজনেস কমিউনিটি বাংলাদেশের মতে, এনইআইআর বাস্তবায়নের ফলে বাজারে কয়েকটি গোষ্ঠীর একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ তৈরি হবে, যা স্মার্টফোনের মূল্য বৃদ্ধির মাধ্যমে ভোক্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং ডিজিটাল অগ্রযাত্রা ব্যাহত করবে।
🎁 Your Special Offer is Loading...
Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.
10s
⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.
Post a Comment