পুকুর দখল করায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেন আ.লীগ নেতা

 পুকুর দখল করায় যুবদল নেতাকে কুপিয়ে হত্যা করেন আ.লীগ নেতা

বগুড়ার কাহালুতে যুবদল নেতা সোয়েব সরকার রাহুল (২৮) হত্যারহস্য উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা জামিল হোসেনের (৪৫) লিজ নেওয়া পুকুর দখল করে মাছ ধরা নিয়ে বিরোধে তাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

গ্রেফতার জামিল হোসেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন খাতুনের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার এসআই মাসুদ করিম শুক্রবার বিকালে এ তথ্য দিয়েছেন।


পুলিশ ও গ্রামবাসী জানান, বগুড়া শহর যুবদলের ১৩নং ওয়ার্ড শাখার সভাপতি সোয়েব সরকার রাহুল বগুড়ার সুলতানগঞ্জ ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি ও শাজাহানপুর উপজেলার কৈগাড়ি গ্রামের মৃত আবদুস সোবাহান সরকারের ছেলে। বগুড়ার কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুড়া উত্তরপাড়া গ্রামে জোড়া ওয়াকফ স্টেটের পুকুর আছে। পুকুরটি দীর্ঘদিন কাহালু সদরের পাল্লাপাড়া গ্রামের আবদুল মজিদ আকন্দের ছেলে ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জামিল হোসেনের দখলে ছিল।

গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর জামিল আত্মগোপন করেন। এরপর রাহুল গ্রামের কয়েকজনের সঙ্গে পুকুরটি দখলে নিয়ে সেখানে মাছচাষ করে আসছেন। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়। বিষয়টি থানা ও আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১টার দিকে রাহুল গ্রামে এসে হুইল বড়শি দিয়ে ওই পুকুরে মাছ ধরছিলেন। এ সময় বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৮-১০ জনের একদল সন্ত্রাসী সেখানে আসে। তারা রাহুলের ওপর হামলা চালায়। তিনি (রাহুল) আত্মরক্ষায় পাশেই একটি ফাঁকা বাড়িতে ঢুকে পড়েন। সেখানে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। এরপর মরদেহ বাড়ির বাহিরে এনে ফেলে পালিয়ে যায়।

এ ব্যাপারে রাহুলের মা হাবিবা আকতার কাহালু থানায় জামিল হোসেনসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

ডিবি পুলিশের একটি দল ওই দিন রাতে ঢাকায় পালিয়ে যাওয়ার সময় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার কাশিয়াডাঙ্গা এলাকা থেকে জামিল হোসেনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে জানান, তার ইজারা নেওয়া পুকুর যুবদল নেতা রাহুল দখল করে মাছ ধরতে যান। নিষেধ করলে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন।


এদিকে তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার এসআই মাসুদ করিম ১ অক্টোবর জামিল হোসেনকে আদালতে হাজির করলে তিনি স্বীকারোক্তি দিতে অস্বীকার করেন। তখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে তিনি (জামিল) রাজি হলে তাকে বগুড়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোছা. শারমিন খাতুনের আদালতে হাজির করা হয়। পরে তিনি যুবদল নেতা রাহুলকে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

তদন্তকারী কর্মকর্তা কাহালু থানার এসআই মাসুদ করিম জানান, পুকুর দখল নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে আসামি স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

কোর্ট ইন্সপেক্টর শহীদুল ইসলাম জানান, আদালতের নির্দেশে আসামিকে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

Countdown Timer
00:01

Post a Comment

Previous Post Next Post