ওরস্যালাইন সবার জন্য নয়, ৭ ধরনের মানুষের জন্য বিপজ্জনক

 

ওরস্যালাইন সবার জন্য নয়, ৭ ধরনের মানুষের জন্য বিপজ্জনক 

 


ওরস্যালাইন বা ওআরএস (Oral Rehydration Solution) হলো ডায়রিয়া, অতিরিক্ত ঘাম বা তাপে সৃষ্ট পানিশূন্যতার অন্যতম কার্যকর প্রতিকার। এটি শরীরে তরল ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণ করে এবং গ্লুকোজ, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। 

তবে অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই এটি নিয়মিত বা অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করেন, যা শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে। এ ব্যাপারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে টাইমস অব ইন্ডিয়া। তাহলে ওরস্যালাইন পান সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

হাইপারনেট্রেমিয়ার ঝুঁকি

রিসার্চগেটে প্রকাশিত একটি গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত ওরস্যালাইন বা ওআরএস গ্রহণ সবচেয়ে বিপজ্জনক সমস্যাগুলোর মধ্যে একটি হাইপারনেট্রেমিয়া। এটি এমন অবস্থা, যেখানে রক্তে সোডিয়ামের মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। ফলে মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব এবং বমি হতে পারে। আবার গুরুতর ক্ষেত্রে খিঁচুনি, বিভ্রান্তি বা মস্তিষ্ক ফোলাভাব দেখা দিতে পারে।

ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা

.অতিরিক্ত পরিমাণ ওআরএস গ্রহণের কারণে শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মতো ইলেকট্রোলাইটের চাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হাইপারনেট্রেমিয়া বা হাইপারক্যালেমিয়া নামে পরিচিত এই ভারসাম্যহীনতা শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত করতে পারে। এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, পেশী দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, বিভ্রান্তি এবং গুরুতর ক্ষেত্রে জীবন হুমকিস্বরূপ জটিলতা অন্তর্ভুক্ত থাকার সম্ভাবনা থাকে।

কিডনির পাথরক্ত থেকে অতিরিক্ত লবণ পরিশোধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কিডনি। কিন্তু ওআরএস যখন বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা হয়, তখন এটি কিডনিকে স্বাভাবিকের থেকে বেশি কাজ করতে বাধ্য করে। এ কারণে কিডনিতে দীর্ঘমেয়াদের চাপ তৈরি হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটি কিডনির কার্যকারিতা নষ্ট করতে থাকে এবং দুর্বলদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়ায়।

সার্বিক স্বাস্থ্যগত অবনতি

অনেকেরই আগে থেকে উচ্চ রক্তচাপ, কিডনি রোগ বা হৃদরোগের মতো অন্তর্নিহিত রোগ থাকে। এসব রোগ থাকলে ওআরএস বা ওরস্যালাইন অতিরিক্ত গ্রহণে আগে থেকেই সতর্ক থাকা উচিত। ওআরএসে লবণ থাকে, এ জন্য অতিরিক্ত গ্রহণে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ সৃষ্টিসহ অন্যান্য শারীরিক জটিলতা খারাপ থেকে অধিকতর খারাপ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়া

ওরস্যালাইন বা ওআরএসে গ্লুকোজ থাকে, এ কারণে অতিরিক্ত ওআরএস গ্রহণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন প্রতিরোধী ব্যক্তিদের জন্য এটি গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ। আবার যাদের রক্তে শর্করার মাত্রা হঠাৎ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাদের শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হতে পারে।

গরমে বা খেলাধুলার সময় অপব্যবহার

গরমে কাজ করা বা খেলাধুলার সময় অনেক ক্রীড়াবিদ ওআরএস গ্রহণ করেন। তাদের ধারণা, এই সময় এটি অতিরিক্ত গ্রহণ করা হলে শক্তি বা সুরক্ষা পাওয়া যাবে। কিন্তু তা নয়। এটি অতিরিক্ত গ্রহণে পেট খারাপ হতে পারে, ডায়রিয়া বা ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্য ব্যাহত হতে পারে। প্রকৃত ডিহাইড্রেশন না হলে স্পোর্টস ড্রিংক বা পানি পানই উপযুক্ত।

ওআরএস’র ওপর নির্ভরশীলতা

অনেকেই ওআরএসের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে কালক্ষেপণ করেন। গুরুতর ডায়রিয়া, সংক্রমণ বা অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্যগত জটিলতার ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। আর মনে রাখতে হবে, অতিরিক্ত ওআরএস কখনো চিকিৎসার বিকল্প হতে পারে না। ওআরএস সব সমস্যার সমাধান করবে এমন বিশ্বাস স্বাস্থ্যের অবনতি করতে পারে। যেকোনো ক্ষেত্রে ওআরএস গ্রহণে কোনো সমস্যা হলে সময় নষ্ট না করে তাৎক্ষণিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের দ্বারস্থ হতে হবে।

🎁 Your Special Offer is Loading...

Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.

10s

⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment

Previous Post Next Post