একটি কাগজের ভুলেই হারাতে পারেন আপনার জমি! মামলা করলেও জমি টিকবেনা
বাংলাদেশের ভূমি আইনের বিশেষজ্ঞদের মতে, মালিকানার চেইন—বিশেষ করে সিএস খতিয়ানের (ক্যাডাস্ট্রাল সার্ভে/৪০-এর খতিয়ান) ভিত্তিতে মালিকানার ধারাবাহিকতা ঠিক না থাকলে যে কোনো দলিলই অকার্যকর হয়ে যেতে পারে।
ওয়ারিশী সম্পত্তি: যেখানে একটি প্রমাণই সবকিছু বদলে দেয়
কোনো ব্যক্তি মৃত্যুবরণ করলে তার সম্পত্তি প্রথমে বণ্টিত হয় ওয়ারিশদের মধ্যে। মৃত ব্যক্তির সিএস খতিয়ানে যার নাম আছে তিনিই প্রকৃত মালিক। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়—
কিছু ওয়ারিশকে বঞ্চিত করে
অন্য ওয়ারিশরা নিজের মতো করে সম্পত্তি বিক্রি করে দেয়
কিংবা আপোষবণ্টন/জমাভাগ না করেই হস্তান্তর করে ফেলে
এই পরিস্থিতিতে যে ওয়ারিশ বঞ্চিত হয়েছে সে নিজের মালিকানা প্রমাণে মাত্র দুটি কাগজ ব্যবহার করেই আদালতে মামলা করতে পারে—
ওয়ারিশিয়ান সনদ
জাতীয় পরিচয়পত্র
এ দুটি নথি দিয়েই বঞ্চিত ওয়ারিশ প্রমাণ করতে পারেন—মৃত ব্যক্তি তার বাবা/মা/স্বামী, অর্থাৎ তিনি সম্পত্তির স্বাভাবিক উত্তরাধিকারী। আদালত সাধারণত এই ভিত্তিতে তার পক্ষে রায় দেন এবং সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের নির্দেশ দেন।
সেক্ষেত্রে প্রতিপক্ষের—
বৈধ দলিল
রেকর্ড
নামজারি
দীর্ঘ দখল
কোনোটিই আদালতে টেকে না।
ক্রয়কৃত সম্পত্তিতেও একই ঝুঁকি
অনেকে মনে করেন বৈধ দলিল থাকলেই ঝামেলা শেষ। কিন্তু বাস্তবে—
যার কাছ থেকে জমি কিনলেন তিনি যদি প্রকৃত মালিক না হন, তবে আপনার দলিলও বাতিল হয়ে যাবে।
কারণ:
সিএস খতিয়ানের মালিক যদি জমি বিক্রি না করে থাকেন
তার মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা যদি আইন অনুযায়ী সম্পত্তি ভাগ না করে
এবং কেউ যদি নিজের অংশের বেশি বিক্রি করে
তাহলে ক্রেতার দলিলও মালিকানার চেইনে ভাঙন সৃষ্টি করে। আদালতে প্রমাণ হলে যে কোনো সময় সেই সম্পত্তি তিনি হারাতে পারেন।
মালিকানার চেইন কেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশে ভূমি জরিপের সব রেকর্ড—সিএস, এসএ, আরএস, বিএস—পরপর একে অপরের ওপর ভিত্তি করে করা হয়। তাই—
সিএস খতিয়ানই হচ্ছে “মাস্টার খতিয়ান”।
এখানের মালিকানা থেকেই পরবর্তী সব রেকর্ড তৈরি হয়।
যদি এই মাস্টার খতিয়ানের মালিক:
জমি বিক্রি না করেন
মৃত্যুর পর ওয়ারিশদের মধ্যে বণ্টন না হয়
অথচ কেউ জমি বিক্রি করে থাকে
তাহলে সেই বিক্রয় সম্পূর্ণ অবৈধ এবং পরবর্তী সব দলিলও অবৈধ হয়ে যায়।
জমি কেনার আগে যে ৫টি বিষয় অবশ্যই যাচাই করবেন
সম্পত্তি অবিভক্ত নাকি বণ্টিত?
যিনি বিক্রি করছেন, তার ওয়ারিশ আরও আছে কি না?
তিনি তার অংশের বেশি বিক্রি করছেন কি না?
সিএস থেকে বিএস পর্যন্ত মালিকানার চেইন সঠিক আছে কি না?
যে জমি কিনছেন সেটি বণ্টন/জমাভাগ/ফারায়েজ অনুযায়ী বৈধভাবে তার প্রাপ্ত অংশ কি না?
শেষ কথা
জমির মালিকানা রক্ষায় সবচেয়ে শক্তিশালী প্রমাণ হচ্ছে সিএস খতিয়ান এবং সঠিক মালিকানার চেইন। দলিল, রেকর্ড, দখল—সবই টিকতে হয় এই চেইনের ওপর। তাই সম্পত্তি কেনার আগে বা মামলা করার আগে অবশ্যই আইনজীবী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যাচাই-বাছাই করে নিন।
জমি কিনতে ভুল করলে পরে দলিল–খতিয়ান–নামজারি সবই বাতিল হতে পারে
🎁 Your Special Offer is Loading...
Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.
⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment