শেষ রাতে যে পাঁচটি আমল করলে আল্লাহ নিজেই সাড়া দেন

 

শেষ রাতে যে পাঁচটি আমল করলে আল্লাহ নিজেই সাড়া দেন


 


ইসলামে শেষ রাতের আমল অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এই সময় আল্লাহর ইবাদত, দোয়া ও তাওবার প্রতি বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।




মহান আল্লাহ তাআলা কোরআনে ইরশাদ করেছেন—“নিশ্চয়ই রাতে জাগরণ প্রবৃত্তি দমনে অধিক সহায়ক এবং স্পষ্ট উচ্চারণে অনুকূল।”


— (সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ৬)




১. দোয়া ও ইসতিগফার


শেষ রাতে দোয়া, ইসতিগফার ও আল্লাহর কাছে যা চাওয়া হয়, তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।


আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—“আমাদের রব প্রতি রাতে দুনিয়ার আসমানে অবতরণ করেন, যখন রাতের এক-তৃতীয়াংশ বাকি থাকে। তিনি বলেন—কে আমাকে ডাকবে, আমি তার ডাকে সাড়া দেব; কে আমার কাছে চাইবে, আমি তাকে দেব; আর কে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, আমি তাকে ক্ষমা করব।”


(সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৪৫). তাওবা ও ক্ষমা প্রার্থনা


অন্য এক হাদিসে এসেছে—রাসুল (সা.) বলেছেন, “রাতে আল্লাহ তাঁর দয়ার হাত প্রসারিত করেন, যেন দিনের অপরাধী তাঁর কাছে তাওবা করে।


তেমনি দিনে তিনি হাত প্রসারিত করেন, যেন রাতের অপরাধী তাওবা করে। এভাবে চলবে যত দিন না সূর্য পশ্চিম দিক থেকে উদিত হয়।”


(মুসলিম, হাদিস : ৬৮৮২)




৩. নফল নামাজ আদায়


শেষ রাতের সময় নফল নামাজ, বিশেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার প্রতি উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।


আল্লাহ বলেন—“আর রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করো, তোমার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। আশা করা যায়, তোমার রব তোমাকে প্রশংসিত অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন।”


(সুরা বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৭৯)




৪. কোরআন তিলাওয়াত


রাতে কোরআন পাঠ করা একটি বিশেষ মর্যাদাপূর্ণ ইবাদত।


আল্লাহ বলেন—“হে বস্ত্রাবৃত! রাতে নামাজে দাঁড়াও, কিছু অংশ ছাড়া রাতের অর্ধেক, কিংবা তার চেয়ে কিছুটা কম বা বেশি, এবং ধীরে ধীরে সুস্পষ্টভাবে কোরআন পাঠ করো।”


(সুরা মুজ্জাম্মিল, আয়াত : ১–৪)




৫. তাসবিহ ও জিকির


রাতের ইবাদত শুধু নামাজ বা কোরআন পাঠে সীমাবদ্ধ নয় তাসবিহ ও জিকিরও শেষ রাতের শ্রেষ্ঠ আমলগুলোর একটি।


আল্লাহ তাআলা বলেন “এবং রাতের একাংশেও তুমি তাঁর তাসবিহ পাঠ করো এবং নামাজের পরও।”


(সুরা কাফ, আয়াত : ৪০)




আরেক আয়াতে এসেছে “আর রাতের একাংশে তাঁর উদ্দেশে সিজদা করো এবং দীর্ঘ রাত ধরে তাঁর তাসবিহ পাঠ করো।”


(সুরা দাহর, আয়াত : ২৬)




মহান আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে শেষ রাতের এই আমলগুলো নিয়মিতভাবে আদায় করার তাওফিক দিন এবং আমাদের ইবাদত কবুল করুননিজের অজান্তেই করছেন ভয়াবহ পাপ? জেনে নিন ৩টি বড় কবীরা গুনাহ!ক্ষণস্থায়ী এই পৃথিবী আসলে এক পরীক্ষার মাঠ, যেখানে প্রতিটি মুমিন নিজের আমল দ্বারা পরকালের জান্নাত অর্জনের চেষ্টা করে। কিন্তু অনেক সময় আমরা নিজের অজান্তেই এমন কিছু গুনাহে লিপ্ত হয়ে পড়ি, যা আল্লাহ তাআলার কাছে অত্যন্ত গুরুতর। ইসলামে এসব ভয়াবহ অপরাধকে বলা হয় কবীরা গুনাহ—অর্থাৎ বড় পাপ। কোরআন ও হাদিসে বারবার সতর্ক করা হয়েছে এসব পাপ থেকে দূরে থাকার জন্য।আজকের প্রতিবেদনে জেনে নিন সেই তিনটি বড় কবীরা গুনাহ সম্পর্কে, যেগুলো থেকে দূরে থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য ফরজ দায়িত্ব।




১. আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা - সবচেয়ে বড় জুলুমশিরক অর্থাৎ আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা ইসলামের সবচেয়ে ভয়াবহ ও অমার্জনীয় গুনাহ। কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, “নিশ্চয়ই আল্লাহ তাঁর সঙ্গে শিরক করা ক্ষমা করেন না, তিনি যাকে ইচ্ছা অন্য সব গুনাহ ক্ষমা করে দেন।”


শিরক মানে আল্লাহর একত্বে সন্দেহ করা বা অন্যকে তাঁর সমকক্ষ ভাবা—যা তাঁর সার্বভৌমত্বের সরাসরি অস্বীকার। কোরআনে এটিকে সবচেয়ে বড় জুলুম বলা হয়েছে, কারণ এটি মানবজীবনের ঈমানের মূল ভিত্তিকেই ধ্বংস করে দেয়।২. নিরপরাধ মানুষ হত্যা- মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ




ইসলাম নিরপরাধ মানুষের রক্ত ঝরানোকে সবচেয়ে ভয়াবহ পাপ হিসেবে গণ্য করেছে। আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেছেন, “যে ব্যক্তি কাউকে হত্যা করল—যদি তা হত্যার প্রতিশোধ বা জমিনে বিশৃঙ্খলার কারণে না হয়—তবে সে যেন সমগ্র মানবজাতিকেই হত্যা করল।”


মানবজীবনের পবিত্রতা ইসলামে সর্বোচ্চ মর্যাদার। তাই রাগ, প্রতিশোধ বা অন্য কোনো কারণে কারও জীবন কেড়ে নেওয়া শুধু দুনিয়ার অপরাধ নয়, আখিরাতে তার শাস্তি আরও ভয়াবহ।




৩. পিতা-মাতার প্রতি অবাধ্যতা- আল্লাহর অসন্তুষ্টির কারণ




পিতা-মাতার প্রতি অবাধ্যতা এমন এক গুনাহ, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি হারানোর অন্যতম কারণ। ইসলামে তাঁদের প্রতি সদাচরণ ও শ্রদ্ধা করা ঈমানের অংশ।


কোরআনে বলা হয়েছে, “তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁর ইবাদত করবে এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদাচরণ করবে। তাদের একজন বা উভয়েই বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদের ‘উফ’ পর্যন্ত বলো না।”


অর্থাৎ, পিতা-মাতার প্রতি কোনো রকম অবাধ্যতা আল্লাহর ক্রোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাঁদের সন্তুষ্টি অর্জন করাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের পথ।






এই তিনটি কবীরা গুনাহ ইসলামে সবচেয়ে ভয়াবহ অপরাধ হিসেবে উল্লেখিত। এগুলো থেকে দূরে থাকা প্রতিটি মুসলিমের জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাই আমাদের উচিত প্রতিদিন আত্মসমালোচনা করা, গুনাহ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা ও সাহায্য চাওয়া।




আল্লাহ তাআলা যেন আমাদের সবাইকে কবীরা গুনাহ থেকে দূরে থাকার তৌফিক দেন এবং নেক আমলের মাধ্যমে জান্নাতের পথে পরিচালিত করেন,আমিন।

🎁 Your Special Offer is Loading...

Please wait a moment. You'll be redirected automatically after the countdown.

10s

⏳ Stay here — your offer will open in a new page.
✅ Redirect happens only once per session.

Post a Comment

Previous Post Next Post